১৮৬১ সালে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর দেড় শ বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। এ সময়ে দিন দিন প্রতিষ্ঠানটির সুনাম বেড়েছে বৈ কমেনি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্রে এমআইটির পরিচিতি বিশ্বজুড়ে। নোবেল বিজয়ীদের মধ্যে ৭৬ জনই পড়াশোনা করেছেন এখানে। কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয় বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১১৫ টি দেশের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করছেন এমআইটিতে।
প্রতিবছর তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এমআইটিতে ভর্তির আবেদন করে। দেড় শ এরও কম সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান। এমআইটির উদার আর্থিক সুবিধা দিতে গিয়েই  আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা সীমিত রাখতে হয়। এমআইটিতে ভর্তির বিষয়টি অত্যন্ত প্রতিযোগিতাপূর্ণ হওয়ায় বেশ আগে থেকে এখানে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। প্রতিযোগিতাপূর্ণ হলেও প্রতি বছরই সারা পৃথিবী থেকে শিক্ষার্থীরা এখানে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে। স্নাতক পর্যায়ে শতকরা ৯ ভাগ এবং স্নাতকোত্তর পর্য়ায়ে শতকরা ৩৮ ভাগ ছাত্রই আন্তর্জাতিক ছাত্র।
ওয়েবসাইট:
- এমআইটির ওয়েবসাইট: http://web.mit.edu
 - ভর্তি সংক্রান্ত তথ্যের জন্য: http://www.mitadmissions.org
 - এমআইটির বাংলাদেশ স্টুডেন্ড এসোসিয়েশন http://web.mit.edu/bangladesh/www/index.htm
 
ভর্তি:
কেবল পরীক্ষায় ভালো ফল নয়, এমআইটিতে ভর্তির জন্য গণিত এবং বিজ্ঞানে ভালো গাঁথুনি প্রয়োজন। গণিত অলিম্পিয়াড, বিজ্ঞানমেলা এসব কর্মকান্ডে অংশগ্রহণকারীদের ক্ষেত্রে সাফল্যের হারটা বেশি।
স্যাট-১, স্যাট-২ এবং টোফেল সম্পন্নের পর যে বিষয়ে পড়েত আগ্রহী সে বিষয়ের ওপর একটি রচনা লিখে ভর্তির আবেদন পাঠাতে হয়। আবেদন সুষ্ঠুভাবে পাঠানো এবং রচনার মানের ওপর ভর্তির বিষয়টি অনেকাংশে নির্ভর করে।
এমআইটির নির্বাচন প্রক্রিয়াটি ‘নিড ব্লাইন্ড’ অর্থাৎ এখানে ভর্তির সময় শিক্ষার্থীর আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করা হয় না। ভর্তির জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করে আর্থিক সাহায্য করা হয়, এমনকি পুরো খরচও দেয়া হয়।
প্রতিবছর জানুয়ারীতে অনলাইনে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হয় এবং ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বৃত্তি এবং আর্থিক সাহায্যের আবেদন চূড়ান্ত করতে হয়। নির্বাচিত হওয়া না হওয়ার বিষয়টি মার্চে এবং বৃত্তির বিষয়টি এপ্রিলে জানানো হয়। সবাই পূর্ণ বৃত্তি পান না, যারা পূর্ণ বৃ্ত্তি পান না তাদের জন্য স্বল্পমেয়াদী চাকরি এবং খন্ডকালীন চাকরির সুযোগ আছে এখানে।
প্রতিবছর জানুয়ারীতে অনলাইনে ভর্তির জন্য আবেদন করতে হয় এবং ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বৃত্তি এবং আর্থিক সাহায্যের আবেদন চূড়ান্ত করতে হয়। নির্বাচিত হওয়া না হওয়ার বিষয়টি মার্চে এবং বৃত্তির বিষয়টি এপ্রিলে জানানো হয়। সবাই পূর্ণ বৃত্তি পান না, যারা পূর্ণ বৃ্ত্তি পান না তাদের জন্য স্বল্পমেয়াদী চাকরি এবং খন্ডকালীন চাকরির সুযোগ আছে এখানে।
ভর্তির আবেদন করা:
অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ছাত্র: যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্র এবং বাইরে ছাত্রদের জন্য আলাদা ভর্তি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন এমন ছাত্রদের যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্র হিসেবে আবেদন করতে হয়। আবার যারা গ্রীন কার্ড পেয়েছেন তাদেরও যুক্তরাষ্ট্রের ছাত্র হিসেবে আবেদন করতে হয়। বাকি সবাই আন্তর্জাতিক ছাত্র হিসেবে আবেদন করতে পারেন। তবে গ্রীন কার্ড পাননি কিন্তু পেতে চলেছেন তারাও আন্তর্জাতিক ছাত্র হিসেবে আবেদন করতে পারেন।
 
স্নাতক কোর্সে আবেদনের যোগ্যতা
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ববর্তী শিক্ষা সমাপ্ত করে এমআইটিতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারে। অধিকাংশ দেশে এ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বয়স ১৭ থেকে ১৯ হয়। তবে ক্ষেত্রেবিশেষে এ বয়স কম বা বেশি হতে পারে। যদি কেউ যুক্তরাষ্ট্রে বা যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর এমআইটিতে ভর্তির আবেদন করেন তবে তাকে বদলি শিক্ষার্থী বা ট্রান্সফার স্টুডেন্ট হিসেবে আবেদন করতে হয়।
 
ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে একটি সাক্ষাতকার নেয়া হয়। এমআইটির প্রাক্তন কোন শিক্ষার্থী এ সাক্ষাতকার নেন। কাছাকাছি এরকম কেউ না থকলে ভিডিও কনফারেন্সিং এর ব্যবস্থা করা হয়। অবশ্য এটি বাধ্যতামূলক নয়, তাই এটি করতে না পারলেও অসুবিধা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে যারা পড়াশোনা করতে আসে তাদের ফলাফল যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাব্যবস্থা অনুযায়ী রুপান্তর করে নেয়া হয় না। এমআইটির ভর্তি কর্মকর্তাগণ সংশ্লিষ্ট দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার বিষয়টি বিবেচনা করে ফলাফল মূল্যায়ন করেন। কোন দেশের জন্য আলাদা কোটা বা ভর্তি সীমা নেই। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যেকোন দেশের শিক্ষার্থী যে কোন সংখ্যায় ভর্তি হতে পারেন।
এখানকার শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ ক্ষেত্রে যোগ্যতা ও প্রতিভার পরিচয় দেবে এটি আশা করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের কয়েকটি বিষয়ে পড়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এ কোর্সগুলো করা বাধ্যতামূলক নয় তবে এমআইটিতে পড়াশোনার ক্ষেত্রে এ কোর্সগুলো বিশেষ সহায়ক হয়।
কোর্সগুলো:

- চার বছরের ইংরেজী
 - গণিত
 - অন্তত এক লেভেল ক্যালকুলাস
 - অন্তত দু’বছর ইতিহাস বা সমাজবিজ্ঞান
 - জীববিজ্ঞান
 - রসায়নবিজ্ঞান
 - পদার্থবিজ্ঞান
 
টেস্ট:
যে সব শিক্ষার্থীর মাতৃভাষা ইংরেজী নয় তাদের ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে দু ধরনের টেস্ট রীতি অনুসরণ করা হয়।  
অপশন-১
SAT বা ACT; দু’টো SAT বিষয় নিতে হবে। একটি লেভেল ১ বা ২ এর ম্যাথ এবং অন্যটি বিজ্ঞান (পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান বা জীব বিজ্ঞান)।
অপশন ২
টোফেল এবং দু’টি বিষয়ে স্যাট টেস্ট। একটি লেভেল ১ বা ২ এর ম্যাথ এবং অন্যটি বিজ্ঞান (পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান বা জীব বিজ্ঞান)।
অন্যান্য তথ্য
- যাদের বাসায় এবং স্কুলে ইংরেজীতে কথা বলতে হয় না তাদের অপশন ২ নেবার পরামর্শ দেয়া হয়।
 - স্যাট রিজনিং টেস্ট বা ACT প্লাস লিখিত টেস্টে অংশ নিতে হয় ইংরেজীভাষী ভর্তি প্রার্থীদের। এছাড়া দু’টো বিষয়ে স্যাট টেস্টে অংশ নিতে হয়।
 - ভর্তির জন্য ন্যূনতম কোন স্কোরের কথা বলা হয় না। টেস্টের ভিত্তিতেই অবেদনকারীদের মধ্য থেকে বেছে নেয়া হয়। তবে ইংরেজীতে দক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য টোফেলে ন্যূনতম স্কোরের কথা বলা হয়।
 
প্রয়োজনীয় টোফেল স্কোর:
ন্যূনতম স্কোর 
 | 
কাঙ্ক্ষিত স্কোর 
 | |
পেপার বেজ টেস্ট (PBT) 
 | 
৫৭৭ 
 | 
৬০০+ 
 | 
ইন্টারনেট বেজড টেস্ট (IBT) 
 | 
৯০ 
 | 
১০০+ 
 | 
এসব টেস্ট দেবার সময় এমআইটিকে স্কুল হিসেবে তালিকাভুক্ত করার পরামর্শ দেয়া হয়।
- এমআইটি স্যাট এবং টোফেল কোড: ৩৫১৪
 - ACT কোড: ১৮৫৮
 
এ সংক্রান্ত ওয়েবসাইট:
স্যাট এর বিস্তারিত তথ্য: www.collegeboard.org
ACT এর বিস্তারিত তথ্য: www.act.org
টোফেল এর বিস্তারিত তথ্য: www.ets.org/toefl
আবেদনের প্রক্রিয়া
- প্রথমে এমআইটির ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি একাউন্ট ওপেন করতে হবে। ঠিকানা:http://my.mit.edu/
 - দরখাস্ত পূরণের প্রথম ধাপ সম্পন্ন করতে হবে। ঠিকানা:http://mitadmissions.org/apply/freshman/part1
 - প্রতি ডিসেম্বরের ১০ তারিখের মধ্যে সাক্ষাতকার গ্রহণকারীর সাথে যোগাযোগ সম্পন্ন করতে হবে।
 - এরপর জানুয়ারীর এক তারিখ থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়।
 
Labels:
Education,
Internet,
Review

 Previous Article





  BD Dial Codes

Responses
0 Respones to "এমআইটিতে ভর্তি"
Post a Comment